দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯০ সালে। প্রতিষ্ঠার পর পৌরসভাটিতে এ পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে ছয়বার। এর মধ্যে চারবারই মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আনোয়ার হোসেন আকন। গতকাল শনিবার কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে এ পৌরসভা নির্বাচন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি আরও তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট সংযুক্ত ছিলেন এ পৌরসভা নির্বাচনে। এছাড়াও চার শ্রেণির নিরাপত্তা বলয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। পাথরঘাটা পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আইয়ুব আলী হাওলাদার জানান, পাথরঘাটা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ৬০৬৭ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আনোয়ার হোসেন আকন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুবুর রহমান খান মুঠোফোন প্রতীকে পেয়েছেন ২২৩২ ভোট। এছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল নারিকেল গাছ প্রতীকে ১ হাজার ৭২৩, বিএনপির সাহাবুদ্দিন সাকু ধানের শীষ প্রতীকে ১৯৮, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ আলম মল্লিক জগ প্রতীকে ৪২৫ ভোট পেয়েছেন। পাথরঘাটা পৌরসভা নির্বাচনের তিন আগে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে থানার সামনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পাথরঘাটা থানার ওসি শাহাবুদ্দিনসহ প্রায় ২০ জন পুলিশ এবং দৈনিক আমাদের সময় ও সমকালের দুই সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের শতাধিক আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা করে থানায় মামলা রুজু করে। পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার সাবরিনা সুলতানা দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, নির্বাচনের দুদিন আগে পাথরঘাটায় যে রণক্ষেত্র হয়েছে তার জবাবটি ভোটকেন্দ্রে দেখিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এর আগে দৈনিক আমাদের সময়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক মাঠ যতই উত্তপ্ত থাকুক এর প্রভাব ভোটকেন্দ্রে পড়বে না।’ তিনি তার কথা মতো কাজ করায় ভোটের দিন ভোটারা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। এদিকে সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদান করতে পেরে আনন্দিত ভোটাররা। পাথরঘাটা পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের পূর্বে যেরকম সহিংসতা শুরু হয়ে রাজপথ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল তাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন তারা। তবে প্রশাসনের আন্তরিকতা এবং কঠোরতায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভোটাররা। আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ আলম মল্লিক আমাদের সময়কে জানান, ‘ভোটের আগের দিনও যেমনটি কামনা করিনি, ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে তার বাস্তবায়ন দেখিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’ সুষ্ঠু ভোটে তিনি হেরে গেলেও জনগণের রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। নির্বাচনে বিজয় লাভ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, ‘আমার ভালোবাসার মান রেখেছে ভোটাররা। আমি এর আগে কালমেঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম। সেখান থেকে পৌরসভায় চারবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আমি জনগণকে ভালোবাসি। এই ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে দিয়েছে নৌকা মার্কাকে ভোট দিয়ে বিজয় করে।’ শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পাথরঘাটা পৌরসভাকে ঢেলে সাজাবেন বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply